অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং পরিচিতি (শেষ ভাগ)
গত পর্বে আমরা দেখেছিলাম ক্লাস ডিফাইন করে কিভাবে, অবজেক্ট তৈরি করে কিভাবে, অবজেক্ট এর মেথড, অ্যাট্রিবিউট সেট করা এবং তা Call
করা। আজকে আমরা বেশ কিছু জিনিস সংক্ষিপ্ত আকারে দেখব। আজকে যা আলোচনা করা হবে:
Encapsulation
Constructor
Inheritance
Polymorphism
Encapsulation:
এর অপর নাম Data hiding
বা Data protection
। OOP
এর একটি জনপ্রিয় ফিচার এবং সফটওয়্যার ডিজাইন ও বিল্ডিংয়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর জানার দরকার নেই সফটওয়্যারটি কীভাবে কাজ করে (যারা নন ডেভলপার) কাজ চললেই এবং মনমত পার্ফর্মেন্স পেলেই হল। সেদিক থেকে Encapsulation
খুবই জরুরি। কোন ক্লাসের Attribute গুলোকে সাধারণত আমরা Encapsulated
করে থাকি। আমরা আগেই দেখেছি Object এর Attribute পরিবর্তন করা কোন ব্যাপার না। ধরা যাক, Person একটি Class যার Attribute গুলো হল name (string type)
এবং age (int type)
।তাহলে আমরা Person এর একটা object তৈরি করে সহজেই তার নাম পরিবর্তন করতে পারি:
উপরের কোডটি ঠিকঠাক চলবে কিন্তু নিচেরটা চলবেই না। পরিবর্তন কোথায়? public
এর বদলে private
বসিয়েছি :)
তারমানে এভাবে আমরা Class
কে Encapsulated
করলাম! আর এতে সুবিধা হল ইউজার ডিরেক্টলি তার Attribute
এ অ্যাক্সেস পেল না।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, যদি আমরা Attribute
এ অ্যাক্সেস না পাই তাহলে সেটা দিয়ে আমাদের কি লাভ? এখানে আবার OOP
সর্বোপরি C++
এর চমক। Private
বা Protected
ডেটা আমরা ডিরেক্টলি অ্যাক্সেস করতে পারি না বটে, কিন্তু আমরা public
ফাংশনের মাধ্যমে private
ডেটায় অ্যাক্সেস পেতে পারি! তার মানে হল, আমার ক্লাসে যদি একটি পাব্লিক মেম্বার ফাংশন থাকে এবং সেটা এমন একটি Attribute
নিয়ে Deal করে যেটা কিনা Private/Protected
তারপরও আমরা ওই Attribute
এ অ্যাক্সেস পাব। নিচের উদাহরণটি দেখা যাক:
setNameAndAge
এবং showNameAndAge
দুইটা যেহেতু পাব্লিক তাই আমরা Object
দ্বারা ডিরেক্টলি অ্যাক্সেস পাচ্ছি।আবার যেহেতু এই দুইটি মেথড ওই ক্লাসের মধ্যে অবস্থিত তাই ওই মেথডগুলো নিজের ক্লাসের সকল Private/Public/Protected Attribute
গুলোতে অ্যাক্সেস পাবে। এখানে ব্যাপারটা ঠিক “কান টানলে মাথা আসে” মাথা প্রাইভেট তাই আমরা ডিরেক্টলি মাথা টানতে পারব না, আমাদের হাতে যেহেতু কান আছে (setNameAndAge এবং showNameAndAge)
তাই ওইটা দিয়েই টানতে পারব :D
এইখানে আরেকটি প্রশ্ন আসে, আমিতো নিজের ক্লাসের মেথড দিয়ে ডেটা পরিবর্তন করছি তাহলে Encapsulation
এর দরকার কোথায়? Encapsulation
দরকার কারণ Public Data
পুরাই Public
আর আমি অন্য কোন Class
এর Object
দ্বারা Access
পেতে পারি।
আউটপুট:
বিগিনারদের জন্য প্রোগ্রামটি একটু জটিল হতে পারে, এখানে দুইটি ক্লাস ব্যবহার করা হয়েছে, একটি হল Person
এবং আরেকটি হল dataChanger
। dataChanger
এর মেথড একটাই এবং সেটা তার কনস্ট্রাক্টর*। dataChanger
এ আমরা একটি Person Class
এর Object
এর রেফারেন্স পাঠাই এবং তার Attribute
গুলো পরিবর্তন করে দেয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে public
অ্যাট্রিবিউটগুলো আসলেই Public
এবং তা অন্যান্য ক্লাসের Method
দ্বারা Accessible!
আমরা যদি শুধু এই পরিবর্তনটা করি তাহলে অন্য ক্লাসের মেথড আর Access পাবে না:
যেসব মেথড ও অ্যাট্রিবিউট Encapsulated
করতে চান সেগুলোকে Access Modifier
দ্বারা Modify
করতে হবে। C++
এ কোন এক্সেস Modifier
না ব্যবহার করলে ডিফল্ট Modifier
হিসেবে private
কাজ করবে। আপাতত Encapsulation
নিয়ে এতটুকুই। এরপরে আমরা Constructor
নিয়ে আলোচনা করব।
Constructor:
কোন ক্লাসের Constructor
একটি ফাংশন ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু এর একটি বিশেষত্ব আছে। Constructor
এর প্রধান বিশেষত্ব হল একে Call
করা লাগে না। Object
তৈরি হওয়ার সাথে সাথে এই ফাংশনে যতগুলো স্টেটমেন্ট থাকবে সেগুলো অন্যান্য সাধারণ ফাংশনের মত Execute
করতে থাকে এবং এটি একাধিক আর্গুমেন্ট নিতে পারে কিংবা নাও নিতে পারে, আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এটি কিছু Return
করে না। তাহলে একনজরে Constructor
এর বৈশিষ্ট্যগুলো হল:
একে
Call
করা লাগে না, অবজেক্ট তৈরি হওয়ার সাথে সাথেই রান হয়এক বা একাধিক
Argument
থাকতে পারে কিংবা আর্গুমেন্ট নাও থাকতে পারেকোন কিছু
Return
করে নাConstructor
যেহেতু ফাংশন তাই এই ফাংশনের নাম অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ক্লাসের নাম হতে হবে
একটি উদাহরণ দেখা যাক:
আউটপুট:
প্রোগ্রামটিতে কনস্ট্রাক্টর কোনটি? আগেই বলেছি, কনস্ট্রাক্টর হল সেই ফাংশন যার নাম আর ক্লাসের নাম একই এবং যেহেতু এটি কিছু রিটার্ন করে না তাই তার আগে কোনপ্রকার Return Type
এর কিওয়ার্ড থাকবে না। এখানে আমাদের ক্লাস হল Person
এবং Person
নামের একটি ফাংশন দেখা যাচ্ছে যার প্রথম আর্গুমেন্ট string
টাইপ এবং দ্বিতীয় আর্গুমেন্ট int
টাইপ। এখন চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায় কনস্ট্রাক্টর আসলে কোনটি!
Person
কনস্ট্রাক্টরটি কি করছে আসলে? এটি দুইটি আর্গুমেন্ট নিয়ে অবজেক্ট এর ভ্যারিয়েবলে তার মান বসাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা যদি main ফাংশনের দিকে লক্ষ্য করি তাহলে দেখা যাবে আমরা Object তৈরি করার সময় দুইটা আর্গুমেন্ট পাস করেছি। একটি “Mr. A”
এবং আরেকটি 5
। Constructor
আর্গুমেন্ট দুটো নিয়ে ক্লাসের name ও age
ভ্যারিয়েবলে বসিয়ে দিল। আদৌ বসালো কিনা তা দেখার জন্য আমরা A.name
ও A.age
দিয়ে অ্যাট্রিবিউটগুলো চেক করলাম এবং আউটপুটে দেখলাম সেটা ঠিকঠাক আউটপুট দেখাচ্ছে।
আশা করি কিছুটা হলেও বুঝা গেল, Constructor
যেহেতু ফাংশন তাই আমরা এটাকে নিচের মত করে বাইরে Declare
করতে পারি!
কনস্ট্রাক্টরের কিভাবে ব্যবহার করে তা নিয়ে দেখা গেল! এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
Constructor এর প্রয়োজনীয়তা:
কনস্ট্রাক্টরের মাধ্যমে আমরা অবজেক্ট এর Initial
ভ্যালু বসিয়ে দিতে পারি, অন্য অর্থে আমরা যদি চাই যে একটি অবজেক্ট যখন তৈরি হবে তখন সেটা কিছু Initial Value
নিয়ে তৈরি হোক। যাতে করে আমার সেই ক্লাসের ভ্যারিয়েবল ধরে ধরে ভ্যালুগুলো না বসানো লাগে। এবং সেই ভ্যালুগুলো ইনিশিয়ালি প্রসেসও করা যায় কনস্ট্রাক্টরের সাহায্যে।
আমরা দেখব Arduino
তে LiquidCrystal
লাইব্রেরি যখন আমরা ব্যবহার করব তখন কনস্ট্রাক্টরে কতগুলো পিন নাম্বার বসিয়ে দেব। ওই পিন নাম্বারগুলো অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট Order
এ দিতে হবে। সাধারণ Liquid Crystal Display
চালানোর জন্য সাধারণত ১৪-১৬ পিন ব্যবহার করা হয়। এখানকার কিছু নির্দিষ্ট পিন আমরা Arduino
এর সাথে কানেক্ট করি এবং ওই কানেক্ট করা পিনগুলো Order
অনুসারে কনস্ট্রাক্টরে বসাই। বাকি সব কাজ হল LiquidCrystal
লাইব্রেরির! অর্থাৎ ওই পিন অনুযায়ী LCD
তে ReadWrite mode
সেট করা, ক্যারেক্টার শো করা ইত্যাদি সব সেটিংস কনস্ট্রাক্টরের মাধ্যমেই ঠিক হয়ে যায়। আমাদের নতুন কোন ফাংশন কল করা লাগে না কিংবা সেটা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা লাগে না।
Inheritance:
ইনহেরিট্যান্স বলতে যা বুঝায় কাজে আসলেই তাই। আমরা প্রত্যেকেই আমাদের নিজ নিজ পিতামাতার কিছু বৈশিষ্ট্যধারণ করে থাকি। একই বংশের লোকজনদের মধ্যে সাধারণত কিছু Common
বৈশিষ্ট্য থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। দোষগুণ যা আছে তা বংশানুক্রমে চলতে থাকে। OOP এর আরেকটি চমৎকার ফিচার Inheritance!
পুরনো কোড ব্যবহার করা এবং আপনার নতুন ক্লাসকে আরও কিছু Method ও Attribute
যোগ করে আরও শক্তিশালী করে তোলা Inheritance
এর অন্যতম কাজ।
আমরা Animal
ক্লাসে লক্ষ্য করি। Animal
ক্লাসের সদস্যরা কি করে? খায়দায়, ঘুমায়, শিকার করে, চলাফেরা করে আরও অনেক কিছু করে। তাহলে আমরা সুবিধার্থে অল্প কিছু ফাংশন ও অ্যাট্রিবিউট দিয়ে Animal Class
টি ডিফাইন করি:
এখন যদি আমাকে বলা হয়, Animal
ক্লাস বানাইলা ঠিকাছে, এবার Bird
নামের আরেকটি ক্লাস তৈরি কর।
Bird
যেহেতু Animal
এর মধ্যেই পড়ে এবং তার eat, sleep ও hunt
এই মেথডগুলোও রয়েছে তাই আমি আগের ক্লাসের মেথডগুলো কপি করে পেস্ট করে দিতে পারি আর যেহেতু এসব কাজের পাশাপাশি Bird
এর আরেকটি Method
আছে আর সেটা হল Fly
বা উড়া। :)
তাহলে ক্লাসটি দাঁড়াবে:
কাজটা কি সুবিধাজনক হল? মোটেই না, যদি শখানেক মেথড ও অ্যাট্রিবিউট থাকে তাহলে কপি করতে করতেই অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে! :P
তাহলে উপায় কী? Inheritance Apply
করা :)
আমরা যদি এখন বলি Bird inherits Animal
তাহলে Animal class এর eat, sleep ও hunt
মেথডগুলো অটোমেটিক` চলে আসবে এবং তার জন্য আমার আর কিছুই করতে হবে না। যেটা অতিরিক্ত লাগবে সেটা শুধু অ্যাড করে দেব।
Inheritance Apply করার পরে কোডটি হবে:
আউটপুট:
Bird
এর ক্লাস থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি সেখানে eat(), sleep(), hunt()
এর কোনটারই Definition
দেওয়া নেই কিন্তু তারপরও ফাংশনগুলো আমরা Call
করতে পেরেছি। এই ফাংশনগুলো এসেছে Animal
ক্লাসের থেকে। Animal
ক্লাসে ফাংশনগুলোর পুরোপুরিভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে তাই Inherit
করার সময় আমাদেরকে ফাংশনগুলো নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় নি, ডিরেক্টলি কল করেই কাজ করা গেছে।
ইনহেরিট্যান্স তাহলে প্রয়োগ করে কিভাবে?
ইনহেরিট্যান্স ও বেশ বড় একটি টপিক, তাই অনেক কিছুই আলোচনা করা হল না। যতটুকু এখানে আলোচনা করা হল সেটুকুও এই কোর্সে লাগবে না আশাকরি।
Polymorphism:
Poly
মানে বহু সেটা আমরা আগেই জানি। Polymorphism
কে সেই হিসেবে বহুরূপতাও বলা যেতে পারে। একই জিনিসের বিভিন্ন রূপ থাকা মানেই সেই জিনিসটি বহুরূপী। OOP
তেও বহুরূপী আছে :P
পলিমর্ফিজমও বিশাল একটি টপিক। আগেই বলে রাখা ভাল, Function Overloading, operator overloading
কে সরাসরি Polymorphism
বলা যাবে না। পলিমর্ফিজমের সংজ্ঞায় Function/Method overloading
পড়ে না কিন্তু একে পলিমর্ফিজমের একটি অংশমাত্র হিসেবে বলতে ক্ষতি নেই। সবকিছু সিম্পল রাখার জন্য আমি এখানে Function Overloading
টা দেখাব এবং আপাতত একেই Polymorphism
হিসেবে বলব। তারপরও আবারও দ্রষ্টব্য, Function overloading
মানেই কিন্তু Polymorphism নয়।
আলোচনা শুরুর আগে নিচের প্রোগ্রামটি দেখা যাক:
আউটপুট:
দেখা যাচ্ছে ক্লাস Shape
এ আমরা তিনটা মেথড তৈরি করেছি একই নামের calcArea
যার কাজ হল ক্ষেত্রফল বের করা। ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তিনটি ফাংশনের নাম এক হতে পারে কিন্তু প্রত্যেকটার সাথে প্রত্যেকটার পার্থক্য বিদ্যমান। পার্থক্যগুলো হল, প্রথম ফাংশনটির আর্গুমেন্ট ২ টা এবং ২টাই int
টাইপের। পরের ফাংশনটিরও আর্গুমেন্ট ২টা কিন্তু ২টার টাইপ হল double
এবং শেষের ফাংশনটির আর্গুমেন্ট কেবল ১টি।
নাম এক হলেও আর্গুমেন্টের ভিত্তিতে ফাংশনগুলো আলাদা। কিন্তু কম্পাইলার কিভাবে বুঝবে আমি আসলে কোন ফাংশনটা Call
করছি? C++
কম্পাইলার এতটাই স্মার্ট যে সে শুধু আপনার দেওয়া আর্গুমেন্ট টাইপ বা কয়টা আর্গুমেন্ট দিয়েছেন সেটা দেখেই বুঝতে পারবে আসলে আপনি কোন ফাংশনটি Call
করছেন। এই পদ্ধতির কেতাবি নাম Function / Method overloading
। আমরা আপাতত একেই পলিমর্ফিজম হিসেবে চিহ্নিত করছি।
আর এখানেই অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ে ইতি টানলাম। OOP এর অনেক ফিচার বাদ পড়েছে ও জিনিসগুলো সাধারণ রাখার জন্য অনেক ভুলভাল কথা লিখেছি। আর্ডুইনো প্রোগ্রামিংয়ে OOP এর ব্যবহার যদিও আমরা কদাচিৎ দেখব তারপরও এই বিষয়গুলোতে ধারণা রাখা জরুরি। পরের পরিচ্ছদে আমরা সিরিয়াল কম্যুনিকেশন সম্পর্কে মোটামুটি জানার চেষ্টা করব। সেখানে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের সব ব্যাপার না থাকলেও সাধারণ ধারণা থাকলে বুঝতে অসুবিধা হবে না। তাছাড়া পরবর্তীতে Header
ফাইল তৈরি করা ও এর ব্যবহারও দেখানো হবে, তখন OOP জানলে কোড অনেকাংশে সংক্ষিপ্ত ও Readable
ও Organized
করা সম্ভব।
Last updated