অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং পরিচিতি

যা যা দরকার:

  • Codeblocks/Codelite/Eclipse বা সমমানের IDE বা C++ কম্পাইলার, Text Editor – Syntax Highlighter সহ

আজকে Arduino নিয়ে তেমন কথা হবে না। শুধু OOP বা Object Oriented Programming নিয়েই আলোচনা করা হবে। OOP মূলত আলোচনা করা হবে C++ ল্যাঙ্গুয়েজে। C++ জানেন না, কোন সমস্যা নেই, যেকোন একটা ল্যাঙ্গুয়েজে OOP আয়ত্ব করলেই হয়, তবে ল্যাঙ্গুয়েজভেদে এর ইম্প্লিমেন্টেশন আলাদা হয়। অবশ্যই OOP একটি বিশাল জিনিস কিন্তু এখানে মোটমাট ২ ভাগে OOP আলোচনা করা হবে কারণ ইচ্ছা করলেই কম কথায় OOP এর বেসিক জিনিসগুলো তুলে ধরা যাবে কিন্তু সেটা পরবর্তীতে সমস্যা তৈরি করতে পারে তাই সবদিক বিবেচনা করে OOP এর পোস্টটা যতটা পারা যায় Informative ও Implementation বেজড রাখার চেষ্টা করা হবে।

প্রোগ্রামিং মডেল [Programming Paradigm]:

আমরা যখনই কোন প্রোগ্রাম লিখি তখন নিচের মডেলগুলোর মধ্যে যেকোন একটি মডেলকে অনুসরণ করে প্রোগ্রাম লিখে থাকি। অনেক মডেলই আছে এবং কিছু কিছু প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ নির্দিষ্ট কিছু মডেল মেনে চলে। Java কে একটি পিওর OOP ল্যাঙ্গুয়েজ বলা চলে। কারণ Java কোড চালাতে গেলে আপনাকে কমপক্ষে একটি ক্লাস ও একটি মেইন ফাংশন ব্যবহার করতেই হবে। আবার C++ এ আমরা Procedural/Functional/OOP ইত্যাদি যেকোন মডেল অ্যাপ্লাই করতে পারি। আমি এখানে দুইটি মডেলের কথা বলছি।

Procedural:

একে Imperative Programming বলা হয়ে থাকে। C তে আমরা যেসব কোড লিখি তা প্রায় সবই Procedural। কারণ কোডটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চলে এবং লাইন বাই লাইন (পড়ুন স্টেটমেন্ট বাই স্টেটমেন্ট) এক্সিকিউট হয়। অন্য কথায় Top To Bottom Approach। যখন একটা নির্দিষ্ট কাজ আমাদের করতে হয় এবং তার জন্য এমন একটি প্রোগ্রাম লিখলেই হয় যেটা টপ টু বটম রান করবে এবং সমস্যাটি সমাধান করবে তখন আমরা Procedural প্রোগ্রামিং মডেল ব্যবহার করে থাকি। এই মডেলে একাধিক ফাংশন ও একটি মেইন ফাংশন ব্যবহার করা হয়। BASIC, Pascal ও C তে Procedural Programming মডেল অনুসরণ করা হয়। সফটওয়্যার ডেভেলপিংয়ে এর প্রয়োগ নেই বললেই চলে। C তে একটি Procedural Programming এর উদাহরণ:

int add(int a, int b);

int main(){
    int firstNum = 6;
    int secondNum = 15;
    int sum;
    sum = add(firstNum,secondNum);
    printf("sum= ",sum);
    return 0;
}

int add(int a,int b){
    int result;
    result = a + b;
    return result;
}

Object Oriented:

একই প্রোগ্রাম যদি আমরা C++ এ অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড স্টাইলে লিখি তাহলে হবে এইরকম:

Object Oriented Programming এর অ্যাপ্রোচ বটম টু টপ। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড ডিজাইনে যেটা থাকতেই হবে তা হল ক্লাস ও অবজেক্ট। এটা ছাড়া OOP চিন্তাই করা যায় না। বেশ কয়েকটি কারণে সফটওয়্যার ডেভেলপিং থেকে হার্ডওয়্যার প্রোগ্রামিংয়ে এর জনপ্রিয়তা চরম পর্যায়ের। OOP এর এই কারণ বা ফিচারগুলো হল:

  • Class, Object

  • Encapsulation

  • Inheritance

  • Polymorphism

  • এগুলোর পাশাপাশি যেটা আলোচনা করা হবে: Constructor, Destructor

Class, Object:

আমাদের আশেপাশে যা আছে তাই Object এবং কতগুলো Object এর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তাদেরকে একটা নির্দিষ্ট দলে ফেলা যায়। এই কনসেপ্টের উপর ভিত্তি করে Object গুলোকে একটি নির্দিষ্ট Class দ্বারা ডিফাইন করা হয়ে থাকে। আমরা গৃহপালিত পশুদেরকে একটি ক্লাস এর আওতায় আনি, নাম দিলাম PetC++Pet কে ক্লাস হিসেবে ডিফাইন করতে হলে আমাদের লিখতে হবে class* Pet। আচ্ছা, এবার Pet দের আমরা কি কি করি? তাদের নাম দিই, খাবার খেতে দিই এবং তাদের ধরণ অনুযায়ী আমাদের তারা Feedback দেয়। এই Feedback, Pet এর Object ভেদে বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। কিন্তু ভালভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তাদের কিছু সাধারণ বা Common বৈশিষ্ট্য ('Properties') আছে। যেমন তারা খাবার খায়, ডাক দেয়, নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয়, এবং ভাল ট্রেনিং পেলে অনেক কিছু করে দেখাতে পারে। তাহলে Pet ক্লাসের Object গুলোর Name, age ইত্যাদি হল তার Attributes, আর খাবার খাওয়া, ডাক দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো তার Method বা প্রোগ্রামিংয়ে আমরা Function আকারে লিখে থাকি। Method গুলোকে আবার Member Function হিসেবেও ডাকা হয়।

আপাতত public:** নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। পরের লাইনগুলো দেখা যাক।

আমি name ভ্যারিয়েবলকে string টাইপ হিসেবে ডিফাইন করলাম, তার Method গুলোকে ফাংশন হিসেবে ডিফাইন করলাম। যেটা মনে রাখতে হবে সেটা হল class Pet { // blablabla }; <- এই সেমিকোলনটার কথা।

আমি এখানে মেথডগুলোর একটা লিস্ট দেখিয়েছি। কিন্তু Method গুলো কীভাবে কাজ করবে সেটা লিখিনি। Method গুলো কীভাবে কাজ করবে সেটা দুইভাবে দেখানো যায়।

  • ক্লাসের ভিতরে [Inside of Class]

  • ক্লাসের বাইরে [Outside of Class]

উপরের প্রোগ্রামটি যদি আমি ক্লাসের ভিতরে লিখে দেখাই তাহলে এমন হবে:

ঠিক যেমন আমরা ফাংশন ডিফাইন করি ওইভাবেই। এবার ক্লাসের বাইরে লিখলে দেখাবে:

প্রথমে আমরা একটা লিস্ট দিলাম কি কি থাকবে, তারপর Method গুলো কীভাবে কাজ করবে সেটা লিখলাম। তাহলে, C++ এ ক্লাসের বাইরে Method ডিফাইন করার নিয়ম হল:

‘::’ কে স্কোপ রেজোল্যুশন অপারেটর বলা হয়। নামটা অনেক ভারী হলেও কাজটা সহজ। খালি বলে দেওয়া কোন ফাংশন কোন ক্লাসে থাকে :)

এই পর্যন্ত যা শিখলাম:

  • ক্লাস তৈরি করা

  • ক্লাসের জন্য AttributeMethod তৈরি করা

  • Method কে ক্লাসের ভিতরে ও বাইরে কীভাবে ডিফাইন করা যায়

এখন যা যা শিখব:

  • Object তৈরি করা

  • Object এর Variable বা Attribute এ Value বসানো

  • Object এর Method Call করা

  • object কে Argument হিসেবে Pass করা

  • Class, object ব্যবহার করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রোগ্রাম তৈরি করা

এই পর্যন্ত যেসব কিছু শেখা হয়ে গেল তা কি আসলেই শিখেছেন? না শিখলে কষ্ট করে আরেকটিবার পড়ুন, বুঝতে সমস্যা হলে Comment করুন। সামনে আরেকটু জটিল হতে পারে।

Object তৈরি:

Object এর ভ্যারিয়েবলে মান বসানো:

প্রোগ্রামে দেখা যাচ্ছে আমরা Pet ক্লাস দিয়ে দুইটি অবজেক্ট তৈরি করেছি। ধরলাম, একটা হল Dog আরেকটা হল Cat।পোষাপ্রাণীর নাম রাখা বাঞ্ছনীয় তাই dog এর নাম দিলাম Tommy এবং cat এর নাম দিলাম Tom। এখানে আরেকটি ব্যাপার লক্ষ্যণীয়, আমরা নাম দেওয়ার সময় dot operator বা objectName.variable = “Value”। Scope Resolution Operatorএর কাজ হল কোনMember FunctionকোনClassএর অন্তর্ভুক্ত। আরDot operatorএর কাজ হলObjectএর নির্দিষ্ট কোনMember FunctionবাVariable এ Accessদেওয়া।nameএকটিstringটাইপ ভ্যারিয়েবলPetক্লাসের জন্য। কিন্তু মজার বিষয় হলPetক্লাসে আমি দুইটিObject` তৈরি করে তাদের ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়েছি যদিও তারা একই ক্লাসের অন্তর্ভুক্ত।

ধরি, variable = cat.name, তাহলে cat.name = “Tom” হবে, variable = “Tom” , মানে “Tom” স্ট্রিংকে আমরা স্ট্রিংটাইপ ভ্যারিয়েবলে বসালাম (অবশ্যই cat অবজেক্টের variable এ)।

উপরের প্রোগ্রামের আউটপুট:

নিচের ছবিটি Pet ক্লাসের UML* (Unified Modeling Language) Diagram:

alt text

আর এই ছবিটি হল অবজেক্ট তৈরি করার পরে:

alt text

Object এর Method Call করা:

আগের মতই, object.functionName(argument) এভাবে অবজেক্টের Method কে Call করা যায়।

প্রোগ্রামে প্রথমে cat Object এর নাম অ্যাসাইন করলাম। এবং অ্যাসাইন করার পর sayName() ফাংশনটি Call করলাম।

আউটপুট:

কোন একটি ফাংশনে Object কে Argument হিসেবে পাস করা:

আমরা জানি, ফাংশনে আর্গুমেন্ট পাস করা যায় দুইভাবে, Pass by reference এবং Pass by value হিসেবে। উপরেরটা হল Pass by Value। প্রোগ্রামে void sayName ফাংশনটি কোন ক্লাসের অন্তর্ভুক্ত নয়, এটি একটি অবজেক্ট ও একটি স্ট্রিংকে আর্গুমেন্ট হিসেবে নিয়ে, অবজেক্টের Attribute name এ শুধু string টা বসিয়ে দিয়েছে, এবং পরের স্টেটমেন্টে প্রিন্ট করে দেখিয়েছে।

আউটপুট:

আমরা যদি মূল প্রোগ্রাম [int main() অংশ] লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাব, sayName এ আমরা cat অবজেক্ট পাস করে ফাংশনের মাধ্যমে cat এর নাম আউটপুটে দেখতে পাচ্ছি। যদি আমি cat.name কে cout করি তাহলে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কারণ কি? কারণ হল Pass by value

ধরুন, আমি আপনাকে একটি ওয়েবপেইজের লিঙ্ক দিলাম (URL)। এখন যদি ওই লিঙ্কে কোন পরিবর্তন হয়, তাহলে পরিবর্তন যেমন আপনিও দেখতে পারবেন আমিও পারব। যদি আপনি আপনার পিসি থেকে লিঙ্কটি ডিলেট করে দেন তাহলে ওয়েবপেজের কিছুই হবে না। এটাই হল Pass by reference

যদি আমি আপনাকে ওই URL এর একটি পেজ প্রিন্ট করে দেই তাহলে সেটি হবে Pass by value, যদি ওই URL এর ওয়েবপেজে কোন পরিবর্তন আসে তাহলে নিশ্চয়ই আপনি আপনার প্রিন্টকৃত পেজটিতে দেখতে পাবেন না। এবং যদি ওটা আপনি নষ্ট করে দেন তাহলে আপনি নিজের কপিটি ধ্বংস করলেন। অর্জিনাল কপি ঠিকি তাদের ওয়েবসাইটে থাকবে।

উপরের প্রোগ্রামটি Pass by value হওয়ার কারণে মূল কপির কোন পরিবর্তন হয় নি।

একই প্রোগ্রাম আমি যদি Pass by reference দিয়ে লিখি তাহলে:

এটার আউটপুট:

Pass by reference এ আমি cat এর লোকেশন পাঠাই & চিহ্নটির মাধ্যমে। আমি cat অবজেক্টটি তৈরি করে তার লোকেশন ফাংশনে পাঠালাম এবং ফাংশনটি নতুন অবজেক্ট তৈরি না করে (আসলে নতুন অবজেক্ট তৈরি করলেও লোকেশন একই নির্দেশ করছে) cat অবজেক্টের লোকেশনের name টা পরিবর্তন করে দিল। Pass by Value তে যে অবজেক্টটি তৈরি করে অর্থাৎ, petObject != cat [Not equal] কিন্তু Pass by referencepetObject == cat কারণ দুটি অবজেক্ট মূলত একটাই লোকেশন নির্দেশ করে আর সেটা হল cat এর লোকেশন। তাই petObject এর name পরিবর্তিত হওয়া মানে কিছুই না cat এর name পরিবর্তিত হওয়া যেহেতু তাদের লোকেশন একই!

কেস স্টাডি: [Led Blinking in Console using OOP!]

নিচের কোডটি রান করলে Led blinking দেখতে পাবেন কনসোলে, মানে কিছু বোরিং টেক্সট আপনাকে দেখাবে কত নাম্বার পিনে led জ্বলছে, কত টাইম নিয়ে ব্লিংকিং করছে এই আরকি।

আউটপুট:

নোট:

Access Modifiers:

C++ এ তিন ধরণের Access Modifiers আছে, public, private ও protected। এটা Encapsulation বা Data Hiding এর অন্তর্গত। তাই এখানে আলোচনা না করে পরবর্তী মূল পোস্টে আলোচনা করা হবে।

UML Diagram:

এখানে UML Diagram বলতে আমরা Class কে চিত্র দ্বারা প্রকাশ বুঝাব [Class Diagram]। এটি বিশাল জিনিস এবং এই সিরিজের আলোচ্য বিষয়বস্তু না। নিচে একটি ক্লাস ডায়াগ্রাম (উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত):

alt text
  • সবার উপরের অংশ হল Class Name। এটা বোল্ড হয় ও মাঝখানে থাকে, প্রথম বর্ণটি Capitalized থাকে

  • মাঝের অংশে Attributes বা Variable থাকে। Left aligned ও প্রথম বর্ণ Lowercase

  • শেষের অংশে Method থাকে। Left aligned ও প্রথম বর্ণ

  • Attributes ও Method এর আগে নিচের টেবিলের চিহ্ন থাকতে পারে [Access Modifier -> +, -, #; Package -> ~, Derived-> / ]

আজকে এই পর্যন্তই, পরবর্তী পরিচ্ছদে OOP এর বাকি বেসিক টপিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।

Last updated